বনওকড়া

বনওকড়ার আঁশ সাধারণ পাটের থেকে মসৃণ ও উজ্জ্বল। বনওকড়ার কচি পাতা শাক হিসেবেও খাওয়া যায়। এমনকি এই গাছ গরুকে খাওয়ালে গরুর দুধ বৃদ্ধি পায়। এর শিকড়ের স্বাদ কটু ও তিক্ত। তবে শিকড়ের রয়েছে ঔষধি গুণ। ক্ষত সারানো ও ব্রণের চিকিৎসায় শিকড়ের রস দারুণ উপকারী।

অনেকে একে বনঘাগরাও বলে থাকেন। গ্রামে একে চটচটি হিসেবেও ডাকা হয়। শহর কিংবা গ্রামে যে কোনোখানেই পরিত্যক্ত জায়গায় এই বুনো গাছ জন্মাতে দেখা যায়। দেশের সব অঞ্চলেই এই গাছ দেখতে পাওয়া যায়। অধিকাংশ মানুষের কাছে এর প্রয়োজনীয়তা না থাকলেও প্রকৃতিপ্রেমী ও ভেষজ চিকিৎসকের কাছে এই গাছ অনন্য। জবা বা ঢেঁড়স জাতীয় এই গাছে সারাবছরই ফুল দেখা যায়।

ফুলের রঙ হালকা গোলাপি। ফুলের মধ্যভাগ লালচে। পাঁচটি পাপড়ি পরস্পর জুড়ে থাকে। ফুলের কেন্দ্রে লম্বা জননাঙ্গ থাকে। ফুলে কীটপতঙ্গের আনাগোনায় সহজেই বোঝা যায় যে ফুলে মধু আছে। পাতা তিনটি খাঁজ বিশিষ্ট। গাছের বীজ দেখতে ছোলা বুটের মতো। পাতা ও ফুল-ফলের স্বাদ কষ্টা, পিচ্ছিল। বীজের অগ্রভাগে হুকের মতো থাকে, যা সহজেই মানুষের কাপড়ে বা বুনো পশুর শরীরে লেগে যায়।

কাপড়ে বা গায়ে লেগে এর বীজ ছড়িয়ে পড়ে। কঙ্গো অববাহিকায় এই গাছ প্রচুর দেখা যায় বলে একে কঙ্গো পাট নামেও অভিহিত করা হয়। পাটের মতো এই গাছ থেকেও আঁশ হয়। এর আঁশ সাধারণ পাটের থেকে মসৃণ ও উজ্জ্বল। বনওকড়ার কচি পাতা শাক হিসেবেও খাওয়া যায়। এমনকি এই গাছ গরুকে খাওয়ালে গরুর দুধ বৃদ্ধি পায়। এর শিকড়ের স্বাদ কটু ও তিক্ত। তবে শিকড়ের রয়েছে ঔষধি গুণ। ক্ষত সারানো ও ব্রণের চিকিৎসায় শিকড়ের রস দারুণ উপকারী। পেটের পীড়া, আমাশয় ও জ্বালাপোড়ায় এই গাছের রস উপকারী। ফাইলেরিয়া তথা গোদ রোগে বনওকড়ার কার্যকারিতা কম নয়। বনওকড়ার উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম Urena lobata.

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //